Wellcome to National Portal
ভূমি মন্ত্রণালয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ৭ ডিসেম্বর ২০১৮

ভূমি আপিল বোর্ড

 

ভূমি আপিল বোর্ড 


ওয়েবসাইট

http://lab.portal.gov.bd/


ঐতিহাসিক পটভূমিঃ

    মানুষ মাত্রই কোন না কোন ভাবে ভূমির উপর নিভরশীল। তন্মধ্যে আমাদের কৃষি নিভরশীল দেশে ভূমির গুরুত্ব আরও বেশী। ক্রমাগত জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে সংকট দিনদিন প্রকটতর হচ্ছে। বিভিন্ন কারণে এদেশে ভূমি ব্যবস্থাপনা ও ভূমি আইনের জটিলতা আবহমান কাল ধরে চলে আসছে। তদানীন্তন ভারতের অংশ হিসাবে এদেশে সব প্রথম 1786 সালে ভূমি ব্যবস্থাপনা ও ভূমি রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী কর্তৃক “বোড অব রেভিনিউ” গঠিত হয়। পরবর্তীতে এই বোডের অধীনে সিভিল সার্ভিস সদস্যরা রাজস্ব বিষয়ক নীতি নির্ধারণ, রাজস্ব ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে বিভিন্ন আইনকানুন প্রণয়ন করতেন এবং বোড অব রেভিনিউর পরামশ গ্রহণ করতেন। তখন বোর্ডের প্রধান কাজ ছিল রাজস্ব প্রশাসন সম্পর্কে কালেক্টর এর কার্যাবলী তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ করা।

1793 সালে চিরস্থায় বন্দোবস্ত আইন প্রণয়নের ফলে রাজস্ব প্রশাসনে নানা জটিলতার সৃষ্টি হয়। তখন জমিদারী প্রথান, নওয়াব, রাজা ও মহারাজাদের কাযক্রম 1793 সনের স্থায়ী প্রজাস্বত্ব রেগুলেশন মতে নিয়ন্ত্রিণ হতো। যাবতীয় রাজস্ব সংক্রান্ত মামলার ট্রাইবুনাল হিসাবে বোড অব রেভিনিউ কাজ করতো। কিন্তু রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন-1950 বহালের পর কিছু কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া রাজস্ব বিষয়ক প্রায় সকল আইন বাতিল হয়। এছাড়া 25 বিঘা পযন্ত খাজনা মওকুফ ও হাট-বাজার ইজারা তারিখ/সন প্রদান পদ্ধতি ভিন্নতর হওয়ায় বোড অব রেভিনিউর গুরুত্ব, কম বিবেচিত হওয়ায় এবং পরবর্তীতে মন্ত্রণালয় কর্তৃক এ নির্বাহী দায়িত্ব পালনের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় “বোড অব রেভিনিউ” বিলুপ্ত ঘোষিত হয়।

পরবর্তীতে ভূমি সংক্রান্ত যাবতীয় জটিলতা নিরসনকল্পে 1980 দশক অনুরূপ বোর্ডের প্রয়োজনীয় দেখা দেয়ায় 1981 সনের 13 নং আইন প্রবতনের মাধ্যমে “ভূমি প্রশাসন বোড” সৃষ্টি করা হয়।

 

ভূমি আপীল বোড প্রতিষ্ঠাঃ-

    ভূমি আপীল বোড দেশের ভূমি ও ভূমি রাজস্ব সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির সর্বোচ্চ আদালত। এর কাজ কোয়াশী জুডিশিয়াল প্রকৃতির। ভূমি ও ভূমি রাজস্ব মামলার আপীল/রিভিশন দ্রুত নিস্পত্তির লক্ষ্যে 1989 সনের 24নং আইনের মাধ্যমে ভূমি আপীল বোড সৃষ্টি হয়।

 

ভূমি আপীল বোর্ডের গঠন, অবস্থান ও জনবলঃ

গঠনঃ

ভূমি আপীল বোড আইন, 1989 এর 4 ধারা অনুযায়ী 1 জন চেয়ারম্যান ও 2 জন সদস্যের সমন্বয়ে ভূমি আপীল বোড গঠিত হয়।

অবস্থানঃ

ঢাকার সেগুনবাগিচাস্থ 2য় 13 তলা সরকারী ভবনের 8ম তলায় ভূমি আপীল বোড অবস্থিত।

জনবলঃ-

    ভূমি আপীল বোর্ডে সরকারের সচিব পদমর্যাদার 1 জন চেয়ারম্যান, অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার 2 জন সদস্য রয়েছে। এছাড়া বোর্ডের 1 জন সচিব (সরকারের উপ-সচিব), 5 জন শাখা প্রধান (সিনিয়র সহকারী সচিব/সহকারী সচিব), ১ জন লাইব্রেরীয়ান এবং 38 জন 3য় ও 4থ শ্রেণীর কর্মচারীসহ সবমোট 48 জন কমকর্তা/কমচারী এর সাংগঠনিক কাঠামোভূক্ত।

 

ভূমি আপীল বোর্ডের কার্যাবলীঃ

    ভূমি আপীল বোর্ডের কার্যাবলী ভূমি আপীল বোড আইন 1989, ভূমি আপীল বোড (সংশোধন) আইন 1990 এবং ভূমি আপীল বোড বিধিমালা 1990 অনুযায়ী পরিচালিত ও সম্পাদিত হয়। ভূমি আপীল বোড বিধিমালা-1990 দ্বারা ভূমি আপীল বোর্ডের কাযবলী ও কাযপদ্ধতি বিধৃত করা হয়েছে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন ভূমি বিষয়ক সমুদয় আইনের অধীনে ভূমি আপীল বোর্ড নিম্নবর্ণিত বিষয়ে আপীল/রিভিশন মামলা নিস্পত্তি করেঃ

    ক)  ভূমি সংক্রান্ত মামলা (রাজস্ব সম্পকীয়)

    খ)  নামজারী ও খারিজ মামলা

    গ)  সায়রাত ও জলমহাল সংক্রান্ত মামলা

    ঘ)  ভূমি রেকড সম্পর্কিত মামলা

    ঙ)  ভূমি উন্নয়ন কর সার্টিফিকেট মামলা

    চ)  খাস জমি বন্দোবস্ত সংক্রান্ত মামলা

    ছ)  পি,ডি,আর এর আওতায় দায়েরকৃত রিভিশন বা আপীল মামলা

    জ)  অর্পিত, পরিত্যক্ত ও বিনিময় সম্পত্তি বিষয়ক মামলা

    ঝ)  ওয়াকফ/দেবোত্তর সম্পত্তি সংক্রান্ত মামলা (উক্ত সম্পত্তির ব্যবস্থাপন ও প্রশাসনিক বিষয় ব্যতিত)

    ঞ)  সরকার কর্তৃক ন্যস্ত অন্যান্য দায়িত্ব পালন;

    ট)  অধঃস্তন ভূমি আদালত সমূহের কাযক্রম পরিদশন, অনুবীক্ষণ ও মূল্যায়ন;

    ঠ)  ভূমি সংক্রান্ত আইন, আদেশ ও বিধি সম্পর্কে সরকার কর্তৃক প্রেরিত বিষয়াদিতে পরামর্শ দান।

 

প্রযোজ্য আইন ও বিধিবিধানঃ

·       ভূমি আপীল বোড আইন 1989

·       ভূমি আপীল বোড (সংশোধন) আইন 1990

·       ভূমি আপীল বোড বিধিমালা 1990

·       ভূমি, ভূমি রাজস্ব ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন ভূমি বিষয়ক সমুদয় আইন, বিধিমালা, সার্কুলার, পরিপত্র, আদেশ ইত্যাদি।

 

ভূমি আপীল বোর্ডের কার্য পদ্ধতিঃ

·       নিম্নআদালত তথ্য বিভাগীয় কমিশনার ও অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) এর আদালতে নিস্পত্তিকৃত মামলার আপীল ও রিভিশন শুনানী ও নিস্পত্তি;

·       চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ কর্তৃক পৃথক ও এককভাবে পক্ষগণকে শুনানীক্রমে আপীল/রিভিশন এবং পুনর্বিবেচনার আবেদননের উপর মামলা নিস্পত্তি;

·       বিভাগভিত্তিক অধিক্ষেত্র নির্ধারণপূবক চেয়ারম্যান ও সদস্যবৃন্দের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব প্রদান;

·       বোর্ডের আদেশের পুনর্বিবেচনা, আইনগত জটিলতা, আইনের ব্যাখ্যার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে চেয়ারম্যান কর্তৃক বিষয়টি ফুল বোর্ডে উপস্থাপনের আদেশ প্রদান;

·       চেয়ারম্যান ও 2 জন সদস্য সমন্বয়ে গঠিত ফুলবোর্ডে শুনানী গ্রহণ ও প্রয়োজনীয় আদেশ প্রদান।

·       অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব), জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাজস্ব সংক্রান্ত আদালতের কার্যক্রম পরিদর্শন ও মূল্যায়ন;

·       ভূমি আপীল বোর্ডের মাসিক সমন্বয় সভায় নিম্ন আদালতের নিস্পত্তিকৃত বিবরণী পর্যালোচনা, মূল্যায়ন ও পরামশ প্রদান।

 

লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যঃ

    ক)  বাদী/বিবাদী উভয় পক্ষের শনানী গ্রহণ ও দলিলপত্র পরীক্ষা পূর্বক বিরোধ নিস্পত্তির আদেশ প্রদান।

    খ)  যথা সম্ভব কম শুনানীর দিন ধায করে স্বল্প সময়ে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ বিচারিক সুবিধা প্রদান

    গ)  মামলা নিষ্পত্তির পর স্বল্পতম সময়ে বাদী/বিবাদীকে রায়ের কপি প্রদান

    ঘ)  দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল হতে আগত নিরীহ জনগণের ভোগান্তি লাঘব করা।

 

মামলা পরিচালনা পদ্ধতিঃ

·       মামলার শুনানী কাযক্রম অনেকটা দেওয়ানী আদালতের ন্যায়

·       বাদী/বিবাদী উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য নোটিশ জারী

·       নিম্ন আদালতের নথিপত্র আনায়নক্রমে উভয়ন পক্ষের উপস্থিতিতে শুনানী গ্রহণ

·       শুনানীকালে বিজ্ঞ কৌশলীগণের অংশগ্রহণ এবং মতামত

·       দলিলপত্র পরীক্ষা করা এবং আদেশ প্রদান

·       মামলার আদেশ দানের পর বাদী/বিবাদী কর্তৃক রিভউ/ফুলবোর্ড করার সুযোগ প্রদান

·       দেওয়ানী আদালতেরও যে কোন পর্যায়ে বিচার প্রাথী হওয়ার সুযোগ।

 

বোর্ড আপীল/আরজি দায়েরের নিয়মাবলী

    ক)  নিম্ন আদালতের আদেশের সার্টিফাইড কপিসহ আবেদনকারীকে নিজে অথবা আইনজীবির মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।

    খ)  আবেদনের উপর 20 (বিশ) টাকার কোট ফি প্রদান।

    গ)  ওকালতনামার উপর 20 (বিশ) টাকা মুল্যের কোট ফি প্রদান।

 

রিভিউ করার প্রক্রিয়াঃ

    ক)  চেয়ারম্যান/সদস্য মহোদয়গণের আদেশের বিরুদ্ধে পুনর্বিবেচনার (রিভউ) আবেদন করতে হলে আপীল আদেশে যে আইনগত ও তথ্যগত বিষয়াবলী বিবেচনায় আনা হয়নি তা সম্পূর্ণভাবে উল্লেখ পূর্বক পুনর্বিবেচনার ি(রিভউ) আবেদন ঐ আদালতে দাখিল করতে হবে।