Wellcome to National Portal
ভূমি মন্ত্রণালয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

ভূমি সংস্কার বোর্ড

 

প্রাক্‌ পরিচিতি

ভূমি সংস্কার বোর্ড ভূমি মন্ত্রণালয়ের একটি সংগঠন। ব্রিটিশ আমলে সৃষ্ট বোর্ড অব রেভিনিউ এর আদলে মাঠ পর্যায়ের ভূমি প্রশাসন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম নিবিড়ভাবে তদারকি ও পরিদর্শনের মাধ্যমে ভূমি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও গতিশীলতা আনয়ন, ভূমি মালিকগণকে সর্বোত্তম সেবা প্রদান নিশ্চিতকরণ, ভূমি উন্নয়ন করের  লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ও আদায়ের অগ্রগতি মনিটরিং ইত্যাদি সুচারুরূপে ও দক্ষতার সাথে সম্পাদনে সহযোগিতা ও পরামর্শ দানের লক্ষ্যে ১৯৮৯ সালে ভূমি সংস্কার বোর্ড গঠিত হয়।

মূলতঃ ভূমি সংস্কার বোর্ড সৃষ্টির পিছনে ভূমি ব্যবস্থাপনার আধুনিকীকরণ, ভূমি ব্যবহার নীতিমালা ও ভূমি ব্যবহারের সার্বিক পরিকল্পনা প্রণয়ন, প্রচলিত আইন-কানুন-বিধির সংশোধন, সংযোজন, যুগোপযোগিকরণ, প্রয়োজনে নতুন আইন-বিধি প্রবর্তন এবং সর্বোপরি ভূমি সংস্কার বিষয়ে গবেষণাধর্মী কার্যাদি পরিচালনা করে সরকারকে পরামর্শদানের উদ্দেশ্য নিহিত রয়েছে।

 

মিশন

কার্যকর পরিদর্শন ও নিবিড় তদারকির মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ের ভূমি প্রশাসন ও ভূমি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনয়ন, গতিশীলকরণ, ভূমি উন্নয়ন করের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ও আদায়ের অগ্রগতি মনিটরিং, ভূমি সংস্কার বিষয়ে সুপারিশমালা প্রণয়ন এবং ভূমি মালিকগণকে সর্বোত্তম সেবা দানে সহযোগিতা প্রদান।

 

অবস্থান

১৪১-১৪৩ মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকায় BIWTA (বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্র্তৃপক্ষ) ভবনের দ্বিতীয় তলায় ভূমি সংস্কার বোর্ড অবস্থিত। এর নিজস্ব কোন ভবন নেই। ভবিষ্যতে একটি ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে

 

ভূমি সংস্কার বোর্ডের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি  ১৭৬৫ সালের ১২ আগষ্ট মাত্র ২৬ লক্ষ টাকার বিনিময়ে মোগল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের নিকট হতে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানি লাভ করে। দেওয়ানি ও রাজস্ব বিভাগ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার উদ্দেশ্যে ওয়ারেন হেষ্টিংস ১৭৭২ সালের ১৩ আগষ্ট ‘‘বোর্ড অব রেভিনিউ ’’ গঠন করেন।  পাকিস্তানী আমলেও বোর্ড অব রেভিনিউ বহাল থাকে । বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৩ সালে এর বিলুপ্তি ঘটে ও ভূমি প্রশাসন এবং ভূমি সংস্কার মন্ত্রণালয় গঠিত হয়। বিভিন্ন বিবর্তন ও পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে ১৯৮৭ সালে এর নামকরণ হয় ভূমি মন্ত্রণালয়। ভূমি মন্ত্রণালয়ের পক্ষে মাঠ পর্যায়ের ভূমি প্রশাসন ও ভূমি  ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও  তদারকি করা কঠিন হয়ে দাঁড়ালে ১৯৮৩ সালের ১৩ নং আইন বলে বিলুপ্ত বোর্ড অব রেভিনিউ-এর আদলে ভূমি প্রশাসন বোর্ড গঠিত হয়। মাঠ পর্যায়ের ভূমি প্রশাসন ও  আপিল মামলা পরিচালনা করা ভূমি প্রশাসন বোর্ডের  পক্ষে দুরূহ হয়ে উঠে। তারপর অনেক গবেষণা ও বিশেষজ্ঞের মতামতের ভিত্তিতে ১৯৮৯ সালে মাঠ পর্যায়ের আপিল মামলা নিষ্পত্তির লক্ষ্যে ২নং অধ্যাদেশ বলে ভূমি আপিল বোর্ড এবং ভূমি প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিচালনার উদ্দেশ্যে ১নং অধ্যাদেশ বলে ভূমি সংস্কার বোর্ড গঠিত হয়। পরবর্তীকালে ১ নং অধ্যাদেশটি জাতীয় সংসদের অনুমোদন লাভের মাধ্যমে ২৩ নং আইনে  পরিণত হয়।

 

ভূমি সংস্কার বোর্ডের সাংগঠনিক কাঠামো

Sanghatonik_kathamo

 

ওয়েবসাইট

http://www.lrb.gov.bd

 

 

ভূমি সংস্কার বোর্ড আইন -১৯৮৯


বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ

ঢাকা, ১৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৩৯৬/ ৩১শে মে, ১৯৮৯

সংসদ কর্তৃক গৃহীত নিম্নলিখিত আইনগুলি ৩১শে মে, ১৯৮৯ (১৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৩৯৬) তারিখে রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভ কারিয়াছে এবং এতদ্বারা এই আইনসমূহ সর্বসাধারণের অবগতির জন্য প্রকাশ করা যাইতেছেঃ-

১৯৮৯ সনের ২৩ নং আইন

ভূমি সংস্কার বোর্ড গঠনের জন্য বিধান করার উদ্দেশ্য প্রণীত আইন

            যেহেতু ভূমি সংস্কার কর্মসূচী বাস্তবায়ন এবং সুষ্ঠু ভূমি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্য ভূমি সংস্কার বোর্ড গঠনের জন্য বিধান করা সমীচিন ও প্রয়োজনীয়:

সেহেতু এতদ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইলঃ-

১. সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তনঃ- (১) এই আইন ভূমি সংস্কার বোর্ড আইন, ১৯৮৯ নামে অভিহিত হইবে।

(২) ইহা ২রা চৈত্র, ১৩৯৫ মোতাবেক ১৬ই মার্চ, ১৯৮৯ তারিখে বলবৎ হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

২. সংজ্ঞাঃ- এই আইনে বোর্ড বলিতে ভূমি সংস্কার বোর্ডকে বুঝাইবে।

৩.  আইনের প্রাধান্যঃ- আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে বিপরীত যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইন ও তদাধীন প্রণীত বিধির বিধানবলি কার্যকর থাকিবে।

৪. ভূমি সংস্কার বোর্ড গঠনঃ- (১) এই আইন বলবৎ হইবার পর সরকার যথাশীঘ্র সম্ভব ভূমি সংস্কার বোর্ড নামে একটি বোর্ড গঠন করিবে।

(২) একজন চেয়ারম্যান এবং অনধিক দুইজন সদস্য সমন্বয়ে বোর্ড গঠিত হইবে।

(৩) বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন এবং তাহাদের চাকুরীর শর্তাবলি সরকার কর্তৃক স্থিরকৃত হইবে।

৫.  বোর্ডের কার্যাবলিঃ- বোর্ডের কার্যাবলি হইবে নিম্নরূপ, যথাঃ-

(ক) সরকার কর্তৃক অর্পিত ভূমি সংস্কার ও ভূমি ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালন;

(খ) কোন আইনের দ্বারা বা আইনের অধীন অর্পিত ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালন।

৬.  বিধি প্রণয়নের ক্ষমতাঃ- এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।

৭.  রহিতকরণ ও হেফাজতঃ- (১) ভূমি সংস্কার বোর্ড অধ্যাদেশ ১৯৮৯ (অধ্যাদেশ নং ১, ১৯৮৯) এত দ্বারা রহিত করা হইল।

(২) অনুরূপ রহিতকরণ সত্ত্বেও, রহিত অধ্যাদেশের অধীনে কৃত বা গৃহীত ব্যবস্থা এই আইনের অধীনে কৃত বা গৃহীত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

 

 

ভূমি সংস্কার বোর্ড বিধিমালা ২০০৫

 ভূমি সংস্কার বোর্ড আইনের ৪ ধারায় ভূমি সংস্কার বোর্ড গঠন চেয়ারম্যান ও সদস্য নিয়োগ, ৫ ধারায় বোর্ডের কার্যাবলি এবং ৬ ধারায় সরকারকে বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। ভূমি সংস্কার বোর্ড আইনের ৬ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতা বলে সরকার ভূমি সংস্কার বোর্ড বিধিমালা ২০০৫ প্রণয়ন করেছে। নিম্নে উক্ত বিধিমালাটি উদ্ধৃত করা হলোঃ-

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার

ভূমি মন্ত্রণালয়

শাখা-১২

প্রজ্ঞাপন

তারিখ, ৯ কার্তিক ১৪১২/ ২৪ অক্টোবর ২০০৫

এস.আর.ও নং-২৯৫-আইন/২০০৫. ভূমি সংস্কার বোর্ড আইন,   ১৯৮৯ (১৯৮৯ সালের ২৩নং আইন) এর ৬ এ প্রদত্ত ক্ষমতা বলে সরকার নিম্নরূপ বিধিমাল প্রণয়ন করিল। যথাঃ-

১. সংক্ষিপ্ত শিরোনামঃ- এই বিধিমালা ভূমি সংস্কার বোর্ড বিধিমাল, ২০০৫ নামে অভিহিত হইবে।

২. সজ্ঞাঃ বিষয় বা প্রসংগের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে এ বিধিমালায়

(ক) ’’আইন’’ অর্থ ভূমি সংস্কার বোর্ড আইন, ১৯৮৯ (১৯৮৯ সনের ২৩ নং আইন);

(খ) ’’চেয়ারম্যান’’ অর্থ ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান;

(গ)  ’’বোর্ড বলিতে ভূমি সংস্কার কোর্ডকে বুঝাইবে;

(ঘ) ’’মন্ত্রণালয়’’ অর্থ ভূমি মন্ত্রণালয়;

(ঙ) ’’সদস্য’’ অর্থ ভূমি সংস্কার বোর্ডের সদস্য;

৩.        বিধিমালার প্রাধান্যঃ- ভূমি সংস্কার ও ভূমি ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত ইতিপূর্বে জারীকৃত বিধি, আদেশ, অনুশাসন, সার্কুলার, পরিপত্র যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই বিধিমালার পরিপন্থী হইলে, এই বিধিমালার বিধানাবলী প্রাধান্য পাইবে।

৪. চেয়ারম্যানের দায়িত্ব ও ক্ষমতাঃ- (১) চেয়ারম্যান বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হইবেন।

(২) চেয়ারম্যানের দায়িত্ব ও ক্ষমতা হইবে নিম্নরূপ, যথাঃ-

(ক) বোর্ড ও মন্ত্রণালয় কর্তৃক অর্পিত সকল দায়িত্ব ও কার্য সম্পাদন এবং ক্ষমতা প্রয়োগ;

(খ) বোর্ডের কার্যাবলী সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য বোর্ডের সদস্য এবং কর্মকর্তাদের মধ্যে কার্যাবলী বন্টন।

৫. বোর্ডের দায়িত্ব ও কার্যপরিধিঃ- বোর্ডের দায়িত্ব ও কার্যপরিধি হইবে নিম্নরূপ, যথাঃ-

(ক) খাসজমি চিহ্নিতকরণ সংক্রান্ত জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কমিটির কর্মকান্ড পরিদর্শন, পরিবীক্ষণ ও তদারকী করা;

(খ) আন্তঃবিভাগীয় জলমহালের ইজারা প্রদান;

(গ) বিভাগীয় পর্যায়ে ভূমি সংস্কার বোর্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন উপ-ভূমি সংস্কার কমিশনার কার্যালয়ের তত্ত্বাবধান করা;

(ঘ) জেলা হইতে তহসিল পর্যায়ের সকল ভূমি অফিস পরিদর্শন, তত্ত্বাবধান ও পরিবীক্ষণ করা;

(ঙ) মন্ত্রণালয়ের নির্দেশক্রমে ভূমি ব্যবস্থাপনার মাঠ প্রশাসন সংক্রান্ত বিভিন্ন অভিযোগের তদন্ত করা;

(চ) জেলা হইতে তহসিল পর্যায়ের সকল ভূমি অফিসের অডিট আপত্তি সংক্রান্ত তদারকী করা;

(ছ) ভূমি রাজস্ব প্রশাসনের মাঠ পর্যায়ের দপ্তরসমূহের বাজেট প্রণয়ন ও ছাড়করণ;

(জ) ভূমি উন্নয়ন করের সঠিক দাবী নির্ধারণ, ভূমি উন্নয়ন কর আদায় বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং মন্ত্রণালয়ভিত্তিক বিভিন্ন সংস্থার বকেয়া দাবী নির্ধারণসহ আদায়ের পদক্ষেপ গ্রহণ;

(ঝ) ভূমি উন্নয়ন কর আদায় সংক্রান্ত মাসিক প্রতিবেদন ভূমি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দপ্তরে প্রেরণ;

(ঞ) কোর্ট অব ওয়ার্ডস আওতাধীন এস্টেটসমূহের ব্যবস্থাপনা ও তদারকী এবং মন্ত্রণালয়ে এতদসংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রেরণ;

(ট) উপরি-উক্ত কার্যাবলী সম্পাদনের উদ্দেশ্যে সকল আনুষঙ্গিক কার্যক্রম গ্রহণ করা।

৬. বোর্ডের সভাঃ- (১) বোর্ডের সভা চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্ধারিত স্থান ও সময়ে অনুষ্ঠিত হইবেঃ

তবে শর্ত থাকে যে প্রতি মাসে বোর্ডের অন্ততঃ একটি সভা অনুষ্ঠিত হইবে।

(২) চেয়ারম্যান বোর্ডের প্রতিটি সভায় সভাপতিত্ব করিবেন।

(৩) প্রত্যেক সদস্যের একটি করিয়া ভোট থাকিবে এবং উপস্থিত সদস্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে সভার সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে এবং ভোটের সমতার ক্ষেত্রে চেয়ারম্যানের দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকিবে।

৭. কার্য পরিচালনাঃ- প্রচলিত সরকারি আদেশ ও নির্দেশ এবং সচিবালয় নির্দেশমালা, ১৯৭৬, প্রয়োজনীয় সংশোধনসহ (MUTATIS MUTANDIS) অনুসরণপূর্বক বোর্ড উহার কার্য সম্পাদন করিবে।

 

রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে,

মুহম্মদ আব্দুল আলীম খান

সচিব।